ইমরান হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের কেশবপুরের ভান্ডারখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিতে ক্ষমতাশীল ও প্রভাবশালীদের জিম্মায় রেখে দোকানঘর নির্মাণ করে জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয় থেকে দোকানদারদের সরকারি জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলা হলেও তারা কর্তৃপক্ষের কোন কথার তোয়াক্কা করছেন না। যে কারণে বিদ্যালয়ের ওই জায়গায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করাও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এ নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৮৯০ সালে ভান্ডারখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ২১৫ জন শিক্ষার্থী ও ৭ জন শিক্ষক রয়েছেন। বিদ্যালয়টি উপজেলার বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের কেশবপুর ভান্ডারখোলা সড়কের পাশে অবস্থিত। বিদ্যালয়টির ৯৬ শতক জমির মধ্যে ৬ শতক জমি বেদখল হয়ে রয়েছে।
সেখানে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ইন্দনে ৯জন ব্যক্তি চায়ের দোকান, মুদি দোকানসহ ৯টি দোকান ঘর নির্মাণ ও দখল করে রেখেছেন। তারা হলেন, সবুর শেখ, জাহাঙ্গীর হোসেন, হাবিবুর রহমান, আব্দুল হামিদ, আজিবর রহমান, জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল গফফার, সাইফুল ইসলাম ও আব্দুল মান্নান গাজী। সম্প্রতি উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে বিদ্যালয়ের জায়গায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু দোকানদাররা জায়গা না ছাড়ায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে ওই সমস্ত দোকানদাররা বলছেন, তারা স্কুলের জায়গায় কোন দোকান তৈরি করেননি। জায়গাটি সরকারি রাস্তার। ওই জায়গা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও দোকানদারদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের কারণে এলাকায় এখন এ নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ভান্ডারখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দা লুবনা খানম বলেন, বিদ্যালয়ের জায়গার ওপর দিয়ে সরকারি রাস্তা চলে গেছে। আবার ৯ জন দোকানপাট নির্মাণ করে বিদ্যালয়ের জমি দখল করে রেখেছেন। দোকান মালিকদের জমি ছেড়ে দিতে বললেও তারা ছাড়ছেন না। এর ফলে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল ওই সমস্ত দোকানদারদেরকে ইন্দন দিয়ে শক্ত করে রেখেছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, স্কুলের জায়গায় যারা দোকান নির্মাণ করে ভোগদখল করছেন তাদের কে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলা হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষের কোন কথা তোয়াক্কা করছেন না। বিষয়টি উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো কোন সুরহা হয়নি। বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, দোকানদাররা স্কুলের জায়গা দখল করে রেখেছেন। ওই জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বলা হলেও তারা জায়গা ছাড়ছে না। ওই জায়গায় কীটনাশকের দোকান দেওয়া আব্দুল মান্নান গাজী বলেন, স্কুলের জায়গায় তারা কোন দোকান দেননি। দোকানের পিছনের অংশের এক চালা স্কুলের জায়গায় পড়েছিল। সেটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি স্বীকার করেন, তাদের দোকানগুলো সরকারি রাস্তার জায়গার উপর রয়েছে। এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুহিন হোসেন বলেন, দ্রুত উভয় পক্ষকে ডেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।